ডেস্ক রিপোর্ট : সূরা ফাতিহার পর প্রথম রাকাতে সূরা ইখলাস পড়ে পরের রাকাতে সূরা ফালাক বা সূরা নাস পড়া যাবে কি? নামাজে সূরা ‘আগে-পরে’ পড়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা কি আবশ্যক? নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ার পর ফরজ কিংবা নফল নামাজের ক্ষেত্রে অনেকে একাধিক সমস্যায় পড়েন।
ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে সূরা বা কিরাত পড়া মাকরুহ। তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না। কিরাতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান শুধু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে। নফলের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য নয়। ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নফল নামাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে পড়া মাকরুহ নয়।’ মাকরুহ হলে শাস্তি পেতে হবে না, তবে এ ধরনের কাজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
নামাজের রাকাতগুলোতে সূরা পড়ার ক্ষেত্রে মৌলিক কয়েকটি কথা স্মরণ রাখলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন সূরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সূরা পড়বেন। অথবা প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়বেন, দ্বিতীয় রাকাতে দুই সূরা ছেড়ে দিয়ে তার পরের সূরা পড়া। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ পড়া যায়। অথবা প্রথম রাকাতে সূরা ফিল পড়ার পর দুই সূরা (মাউন, কাউসার) বাদ দিয়ে সূরা কাফিরুন পড়া যায়।
সূরা আগে-পরে পড়া
সূরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সূরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সূরা পড়বেন। কিন্তু প্রথম রাকাতে কোন সূরা পড়ে পরের রাকাতে তার আগের কোন সূরা পড়া মাকরুহ।
প্রথম সূরা শুরু করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন সেই সূরার পর পরের রাকাতে পড়ার মতো কোনো সূরা থাকে। যেমন প্রথম রাকাতে সূরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা হুমাজাহ পড়া মাকরুহ। কারণ, এতে কোরআনের সুরার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। তবে এমনটা ভুলক্রমে ফেললে সমস্যা নেই।উল্টোপাল্টা পড়া
সূরা ফাতিহা পড়ার পর সুরা মেলানোর ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে বড় কোনো সূরার মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়া এবং এরপরের রাকাতে আরেক সূরার মাঝখান থেকে পড়া উত্তম নয়। উত্তম হলো বড় সূরার যেখান থেকে শুরু করা হয়েছে, সেখান থেকেই তা ধারাবাহিকভাবে পড়ে নামাজ শেষ করা। এ ক্ষেত্রেও ভুলে উল্টাপাল্টা হয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছা করে এমন করা যাবে না।
এক সূরা বাদ দিয়ে আরেক সূরা পড়া
এক সূরা পড়ার পর মাঝখানে এক সূরা বাদ দিয়ে পরের সূরা পড়া মাকরুহ। তবে দুই সূরা বাদ দিয়ে পরের সূরা পড়াতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন প্রথম রাকাতে সূরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সূরা মাউন পড়া মাকরুহ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সূরা কাউসার বা কাফিরুন বা এরপরের সূরাগুলো পড়া যায়। তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।সূরার অংশবিশেষ পড়া
সূরা নাসের আয়াতসংখ্যা ৬। কেউ এর প্রথম অংশ দিয়ে এক রাকাত পড়ে বাকি অংশ দিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে পড়তে চাইলে খেয়াল রাখতে হবে, যেন কমপক্ষে তিন আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়। তিন আয়াতের সীমা হলো কমপক্ষে ৩০ হরফ। কেউ যদি সূরা নাসের মতো করে নামাজ পড়ে, তবে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে উত্তম হলো পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করা।
কেউ কেউ ব্যতিক্রম সূরা পড়াকে মাকরুহ বলেন, আবার কেউ ধারাবাহিকতা রক্ষা করাকে ওয়াজিব বলেন। তবে এসবের যা-ই হোক না কেন, সবার নামাজই হবে।
Leave a Reply